ভগবান শ্রীকৃষ্ণের বাণী সমগ্র

 

ভগবান শ্রীকৃষ্ণের বাণী সমগ্র

ভগবান শ্রীকৃষ্ণের বাণী সমগ্র

মহাভারতে উল্লেখিত ভগবান শ্রীকৃষ্ণের বাণী ও শ্রীকৃষ্ণের উপদেশ যা আপনার জীবনকে পরিবর্তন করে দিবে।

“সময় কখনও মানুষের নির্দেশিত পথে চলে না, মানুষকে সময়ের নির্দেশিত পথে চলতে হয়।”

জীবন না ভবিষ্যতে আছে আর না আছে অতীতে, জীবন তো কেবল 
এই মুহূর্তে আছে; অর্থাৎ এই মুহূর্তের অনুভব করাকেই জীবন বলে।

যে সব ইচ্ছাকে ত্যাগ করে দেয় এবং আমি ও আমার এই লালসাপূর্ণ 
ভাবনা থেকে মুক্ত হয়ে যায়। সেই একমাত্র প্রকৃত শান্তিলাভ করে।

অনেকে মনে করে থাকেন যে সংসারে কাজর্কম ত্যাগ করাই হল সন্ন্যাস। 
কাজ মাত্রকইে তারা বন্ধন বা দুঃখরে কারণ মনে করনে, তাই সকল 
রকম কাজই পরিত্যাজ্য মনে করনে । কিন্তু তারা ভুল করেন, কর্ম ত্যাগ 
করা নয়, র্কমফলের লোভকে ত্যাগ করাই হল আসল ত্যাগ বা সন্ন্যাস।

নরকের তিনটে দরজা হয়- কামনা, ক্রোধ এবং লোভ।


যখন কোনো ব্যক্তি তার লক্ষ্যকে প্রাপ্ত করে ফেলে, তখন তার জীবনের সব 
দুঃখ ঘুঁচে যায় এবং জীবনে নতুন আনন্দ ও খুশি ভরে ওঠে।

যার কাছে সুখ, দুঃখ, মান ও অপমান সবই সমান, সেই একমাত্র সিদ্ধপুরুষ।


দুর্বলই কেবল ভাগ্যের দোষারোপ করে আর-বীর ভাগ্যকে অর্জন করে।


যেকোনো ব্যক্তি যা চায় জীবনে সেটাই হতে পারে, 
যদি সে বিশ্বাসের সাথে সেই বিষয়ের উপর চিন্তা করে।

কর্ম করে যাও কিন্তু ফলের চিন্তা করো না।

অহংভাবই মানুষের মধ্যে বিভিন্নতা সৃষ্টি করে। অহংভাবের অভাব 
থাকলে পরমাত্মার সাথে বিভিন্নতার কোনো আর কারণই থাকেনা।

যেটা ঘটতে চলেছে সেটা ঘটবেই, যা ঘটবে না তা কখনোই ঘটবে না এরকম 
নিশ্চয়তাপূর্ণ মনোভাব যার মধ্যে আছে; তাকে দুশ্চিন্তা কখনোই কষ্ট দিতে পারেনা।

বাহ্যিক বস্তুর ত্যাগকে বাস্তবে ত্যাগ বলেনা, আন্তরিক ত্যাগই হচ্ছে প্রকৃত ত্যাগ। 
আমাদের কামনা, মমতা, আসক্তিই হচ্ছে বন্ধনযুক্ত কিন্তু সংসার তা নয়।

আত্মার জন্ম নেই , না কখনো মৃত্যু হয়। শরীর নষ্ট হয়ে গেলেও , আত্মা নষ্ট হয় না।


খালি হাত এসেছো খালি হাত চলে যাবে , যা কিছু আজ তোমার সেটা 
অন্যদিন কারো ছিল ,পরশু সেটা আরো কারো হয়ে যাবে । আজ তুমি 
যে জিনিস নিজের বলে প্রসন্ন , সেটাই তোমার দুঃখের কারণ।
যখনই সত্যের সাথে অসত্যের লড়াই হয় তখন সত্য একা দাঁড়ায় অসত্যের 
বাহিনী হয় বিশাল, কারণ তার পেছনে মূর্খ, লোভী, স্বার্থপর ও বিশ্বাসঘাতকেরা থাকে।

হে অর্জুন , যবে যবে এই সংসারে ধর্মের অনিষ্ট হয় , এই সংসারে অধর্ম বৃদ্ধি পায় , 
তখন তখন ধর্মের রক্ষার জন্য এই পৃথিবীতে আমি আবার ঘুরে আসি।

যে ব্যক্তি পঞ্চ  কর্মেন্দ্রিয় সংযত করেও মনে মনে শব্দ , রস আদি ইন্দ্রিয় বিষয়গুলি স্মরণ করে , 
সেই মূঢ় অবশ্যই নিজেকে বিভ্রান্ত করে এবং তাকে মিথ্যাচারী ভন্ড বলা হয়ে থাকে।

“যে ব্যক্তির মন তার শত্রু এবং বন্ধুদের মধ্যে সম্পুর্ন 
ভেদাভেদ হীন কেবল মাত্র তিনি পরম শান্তির অধিকারি।”


যে ব্যক্তি পঞ্চ-কর্মেন্দ্রিয় সংযত করেও মনে মনে শব্দ , রস আদি ইন্দ্রিয় বিষয়গুলি স্মরণ করে , 
সেই মূঢ় অবশ্যই নিজেকে বিভ্রান্ত করে এবং তাকে মিথ্যাচারী ভন্ড বলা হয়ে থাকে।

সজ্জন ব্যক্তি আরো ভালো চরিত্রের সজ্জন ব্যক্তির সাথে, নীচ ব্যক্তি আরো নীচ চরিত্রের ব্যক্তির সাথেই থাকতে চায় । স্বভাব দ্বারা জন্ম যার যেমন প্রকৃতি হয়, সে তার সেই প্রকৃতিকে কখনোই ছাড়েনা।


যদি কোন ঘটনার মানুষ ভয়প্রাপ্ত হয় তবে তার পরাজয়ই হয়। 
আর জে মানুষ সব হারিয়েও শান্ত আর একাগ্র থাকে সেই জয়ী। 

“মানুষের মনের উপর পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ থাকলে সেই স্থিতিতে মন কে বলা 
হয় আমাদের পরম বন্ধু ঠিক এই ভাবে মনের উপর যদি নিয়ন্ত্রণ না 
থাকে তবে সেই স্থিতিতে মন হয়ে ওঠে আমাদের পরম শত্রু। “


“নিস্বার্থ সেবার মাধ্যমে, আপনি সর্বদা ফলপ্রসূ হবেন 
বং আপনার সমস্ত আকাঙ্ক্ষার পূর্ণতা পাবে।”

“যা হয়েছে জগতের ভালোর জন্য হয়েছে, যা হচ্ছে জগতের 
ভালোর জন্যই হচ্ছে। যা হবে তা জগতের ভালোর জন্যই হবে।”


“যে ব্যাক্তির মধ্যে অহংকার মাত্রা যত বেশি সেই ব্যক্তির জ্ঞানের পরিধি ততই কম।”


“ইন্দ্রিয় থেকে প্রাপ্ত আনন্দ প্রথমে অমৃতের মতো মনে হলেও শেষ পর্যন্ত এটি 
বিষের ন্যায় ক্ষতি কারক হয়ে ওঠে যা কেবল মানুষরে জীবন কে পাপে পরিপূর্ণ করে।”


“জন্মের সাথেই মানুষের মৃত্যু নির্ধারিত, তাই নিজের 
কর্ম করো যা অনিবার্য তার জন্য দুঃখ করো না।”


“জীবন ধারণে জন্য প্রয়োজন কর্ম অবশই সম্পাদন কর 
তবে বিনা অহংকারে বিনা লালসায়, বিনা হিংসায় কারণ 
ঠিক কর্ম করা উচিত ভালবাসা, সহানুভূতি, নম্রতা এবং ভক্তি  সাথে।”


“মনের স্থিরতার জন্য শান্তি, ভদ্রতা, নীরবতা, আত্মসংযম 
এবং পবিত্রতা শিক্ষা গ্রহণ করা আবশ্যক।”


“জড় বস্তূ গত সুখ সর্বদা খন স্থায়ী, কেবল ঈশ্বেরের প্রতি 
আত্মসমর্পণ এবং ভক্তিই হল অনন্ত সুখরে একমাত্র পথ।”


“লোভ ক্রোধ হিংসা হল মানুষের প্রধান শত্রু যা নিজের অজান্তে  
জীবনে  সবচেয়ে বেশি মুলবান জিনিস সময়ের ক্ষতি করে, 
কারণ সময় হল পরম ক্ষমতাবান যা কারোর জন্য থেমে থাকে না।”


“প্রতিটি কর্মের আগে আমাদের কর্মের প্রতি সঠিক মনোভাব 
গড়ে তোলা অব্যশক তবে সেই কর্ম কে আনন্দের সাথে সম্পুর্ন করা সম্ভব।”


 “যখন সংসারে দেখার মত কিছুই থাকে না, তখন মানুষ ঈশ্বর এর দিকে দৃষ্টি নিক্ষেপ করে।”


“যদি কোন ঘটনার মানুষ ভয়প্রাপ্ত হয় তবে তার পরাজয়ই হয়। 
আর জে মানুষ সব হারিয়েও শান্ত আর একাগ্র থাকে সেই জয়ী। ”


 “বাস্তবে না পরিচয় মানুষের দেহের সাথে যুক্ত থাকে না তো সম্পর্কের ভিত্তি তার 
দেহের সাথে যুক্ত থাকে। মানুষের স্বভাব, তার আচরণ আর তার কার্যই তার পরিচয়।”


“দান তাকেই বলে জাতে দানী হারায় আর যাচক প্রাপ্তি লাভ করে। 
কিন্তু বলিদান সেটাই হয় যা দানী দেয় আর সমস্ত জগৎ প্রাপ্ত করে।”


“সমুদ্র হোক বা সংসার যে ধর্মের নৌকা প্রস্তুত করে সে ঠিক পার হয়ে যায়।”


“বিরোধিতা শক্তির প্রমাণ হয় না। শক্তিমান সেই যে সহনশীল, সহ্য করতে পারে। 
যখন হৃদয় থেকে ক্রোধ আর বিরোধিতা দূর হয়ে যায়, তখন সহনশক্তি ধর্মের 
শক্তিতে পরিণত হয়। ক্রোধ থেকে প্রতিশোধের জন্ম হয় আর ধর্ম থেকে ন্যায় 
জন্মায়। তোমার জীবনেও যদি এমন সময় আসে, যখন তোমার উপর কোন অন্যায় 
হয় তবে ন্যায় করার পূর্বে নিজের ক্রোধের উপর অঙ্কুশ অবশ্যই রেখো।”



“মনুষ্য এই ভ্রমে থাকে যে সকল নির্ণয় সে স্বয়ং করছে। কিন্তু চোখে 
আবেগের অবকুন্ঠন বেঁধে যারা আছে তারা স্বয়ং নির্ণয় কি করে 
করতে পারে? বাস্তবে সব নির্ণয় নিয়তিই করে।”
-(বেদব্যাস)


“যে বৃক্ষ তিক্ত-ফল দান করে সে বৃক্ষকে উৎপাটন করে মধুর ফল প্রদানকারী 
বৃক্ষকে রোপন করতে হয়। ওই বৃক্ষকেই অধিক খাদ্য গ্রহন করিয়ে বা শাখা 
প্রশাখাকে কাট-ছাট করলে মধুর ফল পাওয়া যায় না। ভবিষ্যৎকে শুদ্ধ করার 
জন্য এই অশুদ্ধ বর্তমানকে ধ্বংস করা অনিবার্য। ভবিষ্যতের উদীয়মান 
সূর্যের প্রথম কিরনকে দেখো। যা সবার জন্য প্রতিক্ষা করছে।”


“অধিকতর আত্মা নিজের দেহকেই সব কিছু বলে গণ্য করে, স্বয়ং দেহ থেকে যে ভিন্ন তা জানতেই পারে না শরীরের যে দুঃখ, সুখ, স্বাদ। গন্ধ আদির অনুভব হয় তাকেই নিজের অনুভব মেনে নেয়, আর পরিবর্তনের প্রয়াসই করে না। যে আত্মা পরিবর্তনের প্রচেষ্টাই করে না, নিরন্তর অধর্ম করে চলে তাকে জাগ্রত করার জন্য দন্ড দেয়া অনিবার্য। তুমিও এটা জেনে নাও যে তুমিও কোন শরীর নও, কেবল মাত্র এক আত্মা। এই পৃথিবীতে পরিলক্ষিত সকল মানুষ তা নয় যা তুমি ওদের গণ্য করছ, কিছু সময়ের জন্য এরা শরীরে বসবাস করছে মাত্র। এদের শরীরের মৃত্যু হবে কিন্তু এরা সবাই অমর। সে পুনরায় নতুন শরীর ধারন করবে।”


“প্রেম উন্নতি দেয়, উচিৎ অনুচিতের জ্ঞান দেয়। প্রেম আর মোহের মাঝে পার্থক্য থাকে। বাস্তবে যা প্রেম, তা কোন মোহ নয়। প্রেমের জন্ম করুণা থেকে হয়, আর মোহের জন্ম অহংকার থেকে। প্রেম মুক্তি দেয়, মোহ আবদ্ধ করে। প্রেম ধর্ম, আর মোহ অধর্ম।”

Previous Post Next Post